পহেলা বৈশাখ নিয়ে ছোট কবিতা, বৈশাখের কবিতা ও ছবি, রোমান্টিক কবিতা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পার্থক্য বন্ধুগণ আশা করছি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমরাও আপনাদের দোয়া এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আমরা আজকে আলোচনা করব পহেলা বৈশাখ নিয়ে ছোট্ট কবিতা বৈশাখের কবিতা ও ছবি রোমান্টিক কবিতা। আপনারা যারা অনলাইন অনুসন্ধান করে যাচ্ছেন পহেলা বৈশাখের কবিতা জানার জন্য তাদেরকে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে স্বাগতম।
পহেলা বৈশাখের কবিতা পহেলা বৈশাখে প্রেমের কবিতা পহেলা বৈশাখের নজরুলের কবিতা। বৈশাখের কবিতা ও ছবি তুলে ধরবো আমরা আপনি আমাদের এই আর্টিকেলটি থেকে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের কবিতা ছন্দ সংগ্রহ করতে পারবেন।
পহেলা বৈশাখ নিয়ে ছোট কবিতা
পহেলা বৈশাখ বাংলা বর্ষপঞ্জিকা প্রথম দিন। ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ হয়ে থাকে পহেলা বৈশাখ দিন যেতে বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। পহেলা বৈশাখে প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে তাছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে উৎসবের মধ্যে দিয়ে দিনটিকে পালন করা হয়ে থাকে। আপনারা পয়লা বৈশাখ সম্পর্কে বিভিন্ন কবিতা এবং পহেলা বৈশাখ নিয়ে বড় বড় লেখক যে কবিতা গুলো লিখেছে সেগুলো পেতে আমাদের আর্টিকেল নিচে চোখ রাখুন।
নূতন প্রাণ দাও, প্রাণসখা, আজি সুপ্রভাতে ॥
বিষাদ সব করো দূর নবীন আনন্দে,
প্রাচীন রজনী নাশো নূতন উষালোকে ॥
এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক॥
যাক পুরাতন স্মৃতি,যাক ভুলে-যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক॥
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা
রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,
আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ।
মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক॥
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখি দিন ..
তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে ।
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন,
সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে ।
ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায় হাওয়ায়,
মনকে সুদুর শুন্যে ধাওয়ায়
অবগুন্ঠন যায় যে উড়ে ।
যে ফুল কানন করত আলো,
কালো হয়ে সে শুকালো ।
ঝরনারে কে দিল বাধা-
নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা
দুঃখের শিখরচূড়ে ।
পহেলা বৈশাখের কবিতা ও ছবি ২০২৩
পহেলা বৈশাখ বাঙালি বাঙালি তত্ত্বের সাথে মিশে আছে। বাঙালি প্রাণীর উৎসব বাঙালি ঐতিহ্যের উৎসব পয়লা বৈশাখ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যাপক উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হতো। তাই পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে বিখ্যাত কবি সাহিত্যকর বিভিন্ন ধরনের কবিতা লিখে গেছে আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে সে সকল কবিতা তুলে ধরব।
বর্ষবরণ
– এ কে দাস মৃদুল – হৃদয়ের অন্তরীক্ষে নৃত্যময়ী
বৈশাখ
এলো রে
ঝড়ো হাওয়া বয়ে
বৃক্ষের ডালে নব পল্লবে,
ঘরে ঘরে আনন্দ ধারা নিয়ে;
পুরাতন ধুয়ে মুছে বৈশাখ এলো রে।
জীর্ণতা
পিছু ফেলে
যা ছিলো অনাদরে
নতুন দিনের তরুণ আলোয়,
হাটে মাঠে সার্বজনীন বরেণ্য উৎসবে;
পান্তা ইলিশের সুবাসে বৈশাখ এলো রে।
আগামীর
চলার পথে
সুনিপুণ স্বপ্ন বুকে
হাজার বছরের ঐতিহ্য লালনে,
বাঙালির ঘরে ঘরে শান্তির বারতায়;
হালখাতার নববর্ষ বরণের বৈশাখ এলো রে।
আনন্দ
মেলার মিছিলে
বাঁশরীয়ার বাঁশির সুরে
মানব মানবীর নব উল্লাসে,
ঢোল ডুগডুগির বাউল সঙ্গীতের নৃত্যে;
মনুষ্যত্বের মিলন মেলার বৈশাখ এলো রে।
রবীন্দ্রনাথের নববর্ষের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ সবসময় পয়লা বৈশাখে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পালন করে এসেছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পহেলা বৈশাখ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কবিতা লিখে গেছেন তাই আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটির নিজের রবীন্দ্রনাথের কবিতা উল্লেখ করেছেন। অনেকে রয়েছেন যারা রবীন্দ্রনাথের নববর্ষের কবিতা পাওয়ার জন্য অনলাইনে অনুসন্ধান করে যায় তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বৈশাখ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ!
ধুলায় ধূসর রুক্ষ উড্ডীন পিঙ্গল জটাজাল,
তপঃক্লিষ্ট তপ্ত তনু, মুখে তুলি বিষাণ ভয়াল
কারে দাও ডাক
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ!
ছায়ামূর্তি যত অনুচর
দগ্ধতাম্র দিগন্তের কোন্ ছিদ্র হতে ছুটে আসে!
কী ভীষ্ম অদৃশ্য নৃত্যে মাতি উঠে মধ্যাহ্ন-আকাশে
নিঃশব্দ প্রখর
ছায়ামূর্তি তব অনুচর!
মত্তশ্রমে শ্বসিছে হুতাশ।
রহি রহি দহি দহি উগ্রবেগে উঠিছে ঘুরিয়া,
আবর্তিয়া তৃণপর্ণ, ঘূর্ণচ্ছন্দে শূন্যে আলোড়িয়া
চূর্ণরেণুরাশ
মত্তশ্রমে শ্বসিছে হুতাশ।
পদ্মাসনে বস আসি রক্তনেত্র তুলিয়া ললাটে,
শুষ্কজল নদীতীরে শস্যশূন্য তৃষাদীর্ণ মাঠে
উদাসী প্রবাসী—
দীপ্তচক্ষু হে শীর্ণ সন্ন্যাসী!
জ্বলিতেছে সম্মুখে তোমার
লোলুপ চিতাগ্নিশিখা, লেহি লেহি বিরাট অম্বর,
নিখিলের পরিত্যক্ত মৃতস্তূপ বিগত বৎসর
করি ভস্মসার।
চিতা জ্বলে সম্মুখে তোমার।
হে বৈরাগী, করো শান্তিপাঠ।
উদার উদাস কণ্ঠ যাক ছুটে দক্ষিণে ও বামে,
যাক নদী পার হয়ে, যাক চলি গ্রাম হতে গ্রামে,
পূর্ণ করি মাঠ।
হে বৈরাগী, করো শান্তিপাঠ।
সকরুণ তব মন্ত্রসাথে
মর্মভেদী যত দুঃখ বিস্তারিয়া যাক বিশ্ব- ’পরে,
ক্লান্ত কপোতের কণ্ঠে, ক্ষীণ জাহ্নবীর শ্রান্তস্বরে,
অশ্বত্থছায়াতে—
সকরুণ তব মন্ত্রসাথে।
দুঃখ সুখ আশা ও নৈরাশ
তোমার ফুৎকারলুব্ধ ধুলা-সম উড়ুক গগনে,
ভ’রে দিক নিকুঞ্জের স্খলিত ফুলের গন্ধসনে
আকুল আকাশ—
দুঃখ সুখ আশা ও নৈরাশ।
তোমার গেরুয়া বস্ত্রাঞ্চল
দাও পাতি নভস্তলে, বিশাল বৈরাগ্যে আবরিয়া
জরা মৃত্যু ক্ষুধা তৃষ্ণা, লক্ষকোটি নরনারী-হিয়া
চিন্তায় বিকল।
দাও পাতি গেরুয়া অঞ্চল।
ছাড়ো ডাক, হে রুদ্র বৈশাখ!
ভাঙিয়া মধ্যাহ্নতন্দ্রা জাগি উঠি বাহিরিব দ্বারে,
চেয়ে রব প্রাণীশূন্য দগ্ধতৃণ দিগন্তের পারে
নিস্তব্ধ নির্বাক।
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ!
নজরুলের নববর্ষের কবিতা
রবীন্দ্রনাথের মত কাজী নজরুলের মনেও নববর্ষ নাড়িয়ে দিয়ে গেছিল।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখির ঝড়।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
এই কবিতাটি সকলের মনে আছে। কাজী নজরুল ইসলাম পহেলা বৈশাখকে জয় ধ্বনির মাধ্যমে বরণ করে নিতে বলেছিল। নতুনকে সানন্দে আলিঙ্গন করে নিতে বলেছিল। আজকের এই নিবন্ধে আমরা নজরুলের পহেলা বৈশাখের কিছু কবিতা দেখে নিব।
প্রলয়োল্লাস
কাজী নজরুল ইসলাম
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখির ঝড়।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
আস্ছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য-পাগল,
সিন্ধু-পারের সিংহ-দ্বারে ধমক হেনে ভাঙ্ল আগল।
মৃত্যু-গহন অন্ধ-কূপে
মহাকালের চণ্ড-রূপে–
ধূম্র-ধূপে
বজ্র-শিখার মশাল জ্বেলে আস্ছে ভয়ঙ্কর–
ওরে ঐ হাস্ছে ভয়ঙ্কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
ঝামর তাহার কেশের দোলায় ঝাপ্টা মেরে গগন দুলায়,
সর্বনাশী জ্বালা-মুখী ধূমকেতু তার চামর ঢুলায়!
বিশ্বপাতার বক্ষ-কোলে
রক্ত তাহার কৃপাণ ঝোলে
দোদুল্ দোলে!
অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর–
ওরে ঐ স্তব্ধ চরাচর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
দ্বাদশ রবির বহ্নি-জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন-কটায়,
দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়!
বিন্দু তাহার নয়ন-জলে
সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে
কপোল-তলে!
বিশ্ব-মায়ের আসন তারি বিপুল বাহুর `পর–
হাঁকে ঐ ’জয় প্রলয়ঙ্কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
মাভৈ মাভৈ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে!
জরায়-মরা মুমূর্ষদের প্রাণ লুকানো ঐ বিনাশে!
এবার মহা-নিশার শেষে
আস্বে ঊষা অরুণ হেসে
করুণ বেশে!
দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু চাঁদের কর,
আলো তার ভর্বে এবার ঘর।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
ঐ সে মহাকাল-সারথি রক্ত-তড়িত-চাবুক হানে,
রণিয়ে ওঠে হ্রেষার কাঁদন বজ্র-গানে ঝড়-তুফানে!
খুরের দাপট তারায় লেগে উল্কা ছুটায় নীল খিলানে!
গগন-তলের নীল খিলানে।
অন্ধ করার বন্ধ কূপে
দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যূপে
পাষাণ স্তূপে!
এই তো রে তার আসার সময় ঐ রথ-ঘর্ঘর–
শোনা যায় ঐ রথ-ঘর্ঘর।
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর? –প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন!
আসছে নবীন– জীবন-হারা অ-সুন্দরে কর্তে ছেদন!
তাই সে এমন কেশে বেশে
প্রলয় বয়েও আস্ছে হেসে–
মধুর হেসে!
ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চির-সুন্দর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
ঐ ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর?
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!–
বধূরা প্রদীপ তুলে ধর্!
কাল ভয়ঙ্করের বেশে এবার ঐ আসে সুন্দর!–
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!
পহেলা বৈশাখের ছন্দ
অনেকে রয়েছেন যারা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ছন্দ অনলাইন অনুসন্ধান করে যায় তাদের জন্যই আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে পহেলা বৈশাখ সন্ধ্যা উল্লেখ করেছি। আপনারা চাইলে আমাদের এই আর্টিকেলটি নিচে থেকে পহেলা বৈশাখ ছন্দ সংগ্রহ করে আপনাদের প্রিয় মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
বাজে ঢোল বাজে ঢাক
ঐ এলো বৈশাখ !!””
মেলা হবে খেলা হবে
হবে কবি গান,,,,
বৈশাখে বাঙালির নাচে মন প্রাণ !!””
মন নাচে প্রাণ নাচে
হাসে কবি গুরু
ঝড় এলে বুক কাঁপে
ভয়ে দুরু দুরু !!
পহেলা বৈশাখের কবিতা ২
বৈশাখ এলো ক্ষিপ্ত বেগে
সিঁদুর মেঘের গায়,,
বৈশাখ এলো উগ্রতা নিয়ে
কৃসনো মেঘের নায় !!””
বৈশাখ এলো কাল বৈশাখীর
হাওয়ায়-হাওয়ায় ধেয়ে,,
বৈশাখ এলো বাউলের বেশে
বৈশাখী গান গেয়ে !!””
উচ্ছ্বাসের এই দিনে নবীন
ছড়াও প্রেমের বার্তা ,,
তোমরা জাতির ধরবে হাল
আর হবে দেশের কর্তা !!””
শোষণ যুলুম রুখে দাড়াও
তাড়াও দুখের দিন ,,
সব বেদনা ভুলে বাজাও
হেথায় সুখের বীণ !!””
এদেশ আমার জন্মভূমি
এদেশ আমার প্রাণ ,,
কাঁদলে কেউ দুখে
পড়ে হৃদয় সুতোয় টান !!””
পুরোনো সব দুঃখ ভুলে
ফিরে এলো প্রহেলা বৈশাখ,,
সব ভেদাবেদ ভুলে বাজাও
ন্যায় শাসনের হর্ষ !!””