এবার চুল হবে সুন্দর সহজ হেয়ার কেয়ার রুটিন
পৃথিবীতে নানা রকমের মানুষ আছে। আর এই নানা রকমের মানুষের চুলের ধরন হচ্ছে নানা রকম। তাই ভিন্ন ভিন্ন চুলের ধরনের জন্য চাই ভিন্ন ভিন্ন রকম ভাবে পরিচর্যা। বেশি যত্নের ব্যাপারে জ্ঞান না থাকলে চুল হয়ে যায় পাটের ঝাপসার মত। আপনি যদি পাটের ঝাপসা মত চুল করতে না চান তাহলে বেসিক যত্নের ব্যাপারে জ্ঞান রাখুন। না হলে দেখবেন আস্তে আস্তে সুন উঠতে উঠতে মাথায় টাক পড়ে গেছে।
আপনারা যারা চুলের সমস্যায় ভুগছেন। চুল উঠা নিয়ে চিন্তিত আছেন। অনলাইনে অনুসন্ধান করছেন এর সমাধান খোঁজার জন্য। আমি আজকে তাদের জন্য আমার এই পোস্টটিতে আলোচনা করেছি সহজ উপায়ে হেয়ার কেয়ার রুটিন। আপনারা আমার এই পোস্টটি থেকে নিশ্চিত ভাবে এর সমাধান খুঁজে পেতে পারেন। আর এজন্য আপনাদের অবশ্যই আমার এই পোস্টটি মনোযোগ সহিত পড়তে হবে সমাধান খোঁজার জন্য। আমি নিচে চুলের যত্নে সহজ হেয়ার কেয়ার রুটিন সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
সপ্তাহে কতদিন চুলে শ্যাম্পু করা উচিত
মানুষের হাতের আংগুল যেমন পাঁচটায় সমান হয় না ঠিক তেমনি মানুষের মাথার চুলের ধরন সবারই একই রকম হয় না। তাই প্রতিটি মানুষের চুলের ধরন অনুযায়ী ঠিক করা উচিত আসলে শ্যাম্পু কতদিন পর পর করতে হয়। সাধারণত সপ্তাহে এক থেকে তিন দিন চুলে শ্যাম্পু করা উচিত। কিন্তু চুল যদি হয় অতিরিক্ত অয়েলি তখন তিন দিনের বেশি শ্যাম্পু করতে হবে। আর এক্ষেত্রে আপনার পেশার উপর নির্ভর করবে আপনি কতদিন পর শ্যাম্পু করতে পারবেন। কেননা দেখা যায় অতিরিক্ত শ্রম দিলে মাথা ঘামে ভিজে যায় এবং তেল চিটচিটে হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে আপনাকে ঠিক সেদিনই গোসলের সময় চুলের শ্যাম্পু করে ফেলা উচিত।
বিভিন্ন চুলের শ্যাম্পু করার নিয়ম
এখন আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব বিভিন্ন ধরনের চুলের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে কিভাবে আপনি শ্যাম্পু করবেন সেই বিষয়ে
স্ট্রেইট হেয়ারের জন্য
স্ট্রেইট হেয়ারের জন্য সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। স্ট্রেইট হেয়ারে ভলিউম থাকে না বলে আগাগোড়া সমান হয় এবং ঝরে পড়ে ও সমান হয়। এই চুলের স্ক্যাল্প তেলতেলে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই চুলের জন্য সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করবেন আর বেশি হয়নি হলে চার দিন।
ওয়েভি হেয়ারের জন্য
বেবি হেয়ার কার্লি হেয়ার মতো নিচের দিকটা হালকাভাবে ঢেউ থাকে কিন্তু পুরোটা কার্লি হয় না। এই চুলের অত্যাধিক তেলতেলে হয় এজন্য সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করা উচিত। আর আপনি যদি চান তাহলে সপ্তাহে দুই দিন শ্যাম্পু করলে পারবেন তবে লক্ষ রাখবেন আপনার চুল যদি মোটা হয় তাহলে।
কার্লি হেয়ারের জন্য
কার্লি হেয়ার একদম আলাদা। এর চুল ভিশন কোঁকড়া দেখতে হয় এবং উস্কোখুস্কো। একটি অয়েলি হয়না তাই চুল পড়ে না। এই জাতীয় চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনিং এবং সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন চুল ধুতে হবে হাইড্রেটিং শ্যাম্পু দিয়ে। আর এই শাম্পুটা অবশ্যই সালফেট এবং অ্যালকোহল বিহীন হতে হবে।
কয়েলি হেয়ারের জন্য
এই চুল কয়েলি মত দেখতে বলে কয়েলি হেয়ার বলে। একচুল অন্য চুলের তোলো নাই মারাত্মক শুষ্ক হয় এবং ফেটে ভেঙে যায়। তাই এর চুল বেশি শ্যাম্পু করতে হয়না। সপ্তাহে 1/2 দিন এর বেশি শ্যাম্পু করা চলবে না।
চুল ধোয়ার পানি কেমন হতে হবে?
চুল আপনার যে রকমই হোক না কেন চুল ধোয়ার পানির ট্যাপ চাই একই রকম শীতল। আপনি কখনো গরম পানি ব্যবহার করতে পারবেন না চুল ধোয়ার জন্য। গরম পানি দিয়ে আপনার গোসল আরামদায়ক হলেও চুলের ভীষণ ক্ষতি করে।এতে ন্যাচারাল অয়েল বেরিয়ে যায় ফলে চুল শুষ্ক ফ্যাঁসফ্যাঁসে এবং ভেঙ্গে যেতে পারে।তাই আপনি আপনার চুল স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধোয়ার চেষ্টা করবেন।
চুল ভালো রাখার জন্য কি কি খাবার খাওয়া উচিত?
চুল ভালো রাখার জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন সবুজ শাক বাদাম গাজর ডিম মাছ মিষ্টি আলু ভিটামিন সি এগুলো উত্তম খাবার।এগুলো খাবার খেলে আপনার শরীরের জিম প্রোটিন ভিটামিন আয়রন এগুলো কাজ করবে এবং চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
চুলের ভলিউম বাড়ানোর টিপস
ভলিউম মাই জিং শ্যাম্পু ই যথেষ্ট চুলের ভলিউম বাড়ানোর জন্য।এরকম চুলের জন্য আপনি শ্যামপুর আগে নারিকেল তেল ব্যবহার করে চুলকে ফুরফুরে রাখবেন।চুল ফুলিয়ে আপনি পার্টি সাঁঝের জন্য ব্লো ড্রাই করতে পারবেন।
চুলের যত্নে আরো কিছু টিপস
- চুলে প্রতিদিন তেল দেয়া উচিত না। যে কয়দিন শ্যাম্পু করবেন তার ১ খেকে ২ ঘন্টা আগে হট অয়েল মাসাজ করবেন শুধু। প্রতিদিন তেল দিলে বা স্ক্যাল্পে তেল বেশিদিন জমে থাকলে চর্মরোগ, খুশকি সহ নানা ধরণের সমস্যা হবে। তাছাড়া প্রতিদিন তেল দিলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করা বাধ্যতামূলক। এতে চুলের আরো ক্ষতি হবে।
- চুলের আগা ফাটার সমস্যায় প্রতি দুই থেকে তিন মাস অন্তর অন্তর আগা ট্রিম করতে হবে। অনেকে আছেন যারা প্রতি ছয় মাস অন্তর আগা ট্রিম করেন। এতে চুল অনেকটা ফেটে যায়। চুল খুব ছোট করা ছাড়া উপায় থাকে না তখন।
- শরীরে পুষ্টির ঘাটতি থাকলে তার প্রভাব চুলেও পড়ে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হেয়ার কেয়ার সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে। বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট সবগুলোর মধ্যে সেরা।
- দীর্ঘমেয়াদী চুল পড়ার সমস্যার ক্ষেত্রে ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন এবং হিমোগ্লোবিন চেক করে নিন।
- প্রতিদিন যদি চুলে স্টাইল করতে চান, তাহলে ব্লো-ড্রাই বা কার্লিং আয়রন প্রয়োগ করার আগে হিট প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার করুন চুলে।
- ভেজা চুল আঁচড়ালে ভেঙে যায় খুব সহজে। তাই চুল কিছুটা শুকিয়ে নিন, হালকা ভেজা থাকতে আঁচড়াবেন।
আপনারা যারা আমার এই পোস্টটি থেকে উপকৃত হয়েছেন তারা আরও সুন্দর সুন্দর পোস্ট পাওয়ার জন্য আমার এই সাইটটিতে আসবেন। আমি আবারো আপনাদের জন্য সুন্দর সুন্দর টিপস নিয়ে হাজির হব। সে পর্যন্ত আপনারা ভালো থাকবেন।