টিপস

রাতের খাবার খেতে দেরি হয় রোজ? ওজন বৃদ্ধি! সত্যি না মিথ্যা

কথায় আছে, ভোরের হাওয়া হাজার টাকার দাওয়া। তাই তারা তারি ঘুমিয়ে সকালে উঠা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আপনারা যারা ওজন বৃদ্ধি নিয়ে ভাবছেন। তাদের জন্য আমি আজকে নিয়ে এসেছি কত গুলো স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনা নিয়ে। এতে আপনারা পাবেন কিছু টিপস যা আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য জানা খুবই জরুরী।

আপনারা যারা অনলাইনে অনুসন্ধান করে চলছেন স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস পেতে। আজকে আমি তাদের জন্য আমার এই পোস্ট টিতে স্বাস্থ্যবিষয় নিয়ে কথা বলেছি। কি করলে আপনার শরীরে ওজন বাড়বে ও কি করলে ওজন কমবে এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে মনোযোগের সহিত আমার পোস্টটি পড়তে থাকুন।

দেরিতে খাবার খাওয়ার ঝুঁকি

আমরা বিভিন্ন কারণে দেরিতে খাবার খাওয়ার ঝুঁকি টুকু নিয়ে নি। কিন্তু এটা ভাবি না দেরিতে খাবার খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। এতে করে আমাদের শরীরে নানা রকম রোগ বাসা বাঁধে এবং শরীরের ওজন বেড়ে যায়। আজকে আমি আমার এই পোস্টটিতে সেইসব ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করব।

  • দেরি করে খেলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের আধিক্য বেড়ে যায়। যার জন্য মনের উপর এর দুষ্পরিনাম দেখা যায়। মানসিক অবসাদ, খিটখিটে মেজাজ, মুড সুইং ও ডিপ্রেশন এর সিম্পটম দেখা যায়। রাতে খাবার জন্য পরের দিন খিদে মন্দা ও হয়।
  • বেশি রাতে খাবার খাওয়ার আর একটি অসুবিধে হলো ঘুম ধরায় সমস্যা। এছাড়াও সুগার লেভেল বেড়ে যায় তরতরিয়ে কারণ রাতে খাওয়া গ্লুকোজ শরীর ঠিকঠাক সংশ্লেষ করতে পারেনা। ডায়াবেটিস ও হয় যে কারণে।
  • খাবার যদি পেটে দেরি করে ঢোকে তবে শরীর ফ্রি রাডিক্যাল মুক্ত করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। যার ফলে কোষের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে ক্যান্সার এর সম্ভাবনা বাড়ে।
  • দেরিতে খাওয়া মানেই অনেক্ষন খিদে চেপে ধরে রাখা। ফলে শরীরে গ্যাস হতে পারে এবং এসিডিটি ও। এর থেকে আলসার অব্দি গড়াতে পারে রোগ।
  • অনেকক্ষন ধরে খিদেয় থাকলে আমাদের মেটাবলিক রেট স্লো হয়ে যায়। এরপর খাবার খেলেই তা চট করে বেড়ে যায় ফলে আমরা ওয়েট গেন করি।
  • তেল মসলাযুক্ত খাবার রাতে খেলে তা শরীর ঠিক ভাবে পচন করতে পারেনা। হজমে গন্ডগোল এর ঝক্কি পোহাতে হয়।
  • এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যত বেশি রাত করে খাওয়া হয় ততই আমাদের শরীরের মধ্যে ইনসুলিন ও লেপ্টিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যা বেশি করে চর্বি জমাতে সাহায্য করে।

রিসার্চ করে কি বলেছেন

অনেকেই রিচার্জ করে দেখেছেন দেরিতে খাবার খেলে কি ঘটতে পারে আর এই রিসার্চ সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরেলম্যান স্কুল অফ মেডিসিন এর গবেষকরা বলছেন যে অসময়ে খেলে বিশেষত রাতের বেলা যথাযথ টাইমের পর খেলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। যার দরুন ওজন বেড়ে ওবেসিটির দিকে ঠেলে দেয় মানুষকে।
  • একটি সমীক্ষা চালানো হয় সঠিক ওজনসম্পন্ন ৯জন মানুষদের মধ্যে। যেখানে সকাল সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে তিনবেলা খাবার দিয়ে তাদের উপর আট সপ্তাহ যাবৎ একটি গবেষণা করা হয়।
  • এর মধ্যে কিছুজন রাত ১১টার পর খাবার গ্রহণ করেন। তাদের ক্ষেত্রে শারীরিক পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তাদের শরীরে গ্লুকোজ, হৃদরোগ ও ট্রাইগ্লিসারয়েড এর মাত্রা বেড়ে স্বাস্থ্যের ব্যাধি দেখা দিয়েছে।
  • ক্যালিফোর্নিয়ার একদল গবেষক জানাচ্ছেন দেরিতে খেলে মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব পড়ে ও তার স্মৃতিশক্তি ক্ষয় হয়। দুঃস্বপ্ন যারা দেখেন তাদের অধিকাংশই রাতে দেরি করে খেয়ে ঘুমোতে যান।
  • তুরস্কের ডকুস ইউনিভার্সিটির গবেষণা আবার বলছে দেরিতে খেলে পরের দিন বেশি খিদে অনুভূত হয়। যা পরবর্তীতে বেশি ওজন বাড়াতে সহায়ক হয়।

রাতে খাবার স্বাস্থ্যবিধি

নিচে কিরকম খাবার খাবেন সে তথ্য সমূহ আলোচনার মাধ্যমে দেখানো হল। সুস্বাস্থ্যের জন্য যেসব খাবার আপনার শরীরে জরুরি সেইসব খাবার আপনি গ্রহণ করুন। যেসব খাবার আপনার শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর সেসব খাবার আপনি বর্জন করুন।

  • চেষ্টা করুন রাতে ৮টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলতে। রাতের বেলায় ভারী কিছু না খাওয়াই মঙ্গল। তেল মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করুন।
  • রাতের বেলায় ভারী খাবার খেলে তা পরিপাকে অসুবিধায় পরে শরীর কারণ শরীর সম্পূর্ণ অকেজো থাকে রাত্রিতে। এক্টিভিটি না হবার জন্য অম্বল এর সমূহ সম্ভাবনা বাড়ে।
  • রাতে খাবার পর ধূমপান কখনোই করবেন না। রাতের বেলায় একটি সিগারেট খাওয়া সারাদিন ধরে খাওয়া ১০টা সিগারেট খাওয়ার সমতুল্য।
  • লোকে বলে ভরা পেটে ফল। সেটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। খাবার পর পরই ফল খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। অন্তত ঘন্টা খানেক বিরতি দিয়ে তারপর ফল খাবেন।
  • অনেকের অভ্যাসবশত রাতে খাবার পর ও চা খেয়ে থাকেন । এবার থেকে বন্ধ করুন। চা এর ট্যানিনে থাকে এসিড যা প্রোটিন হজমে বাধা দেয়।
  • খেয়েই বিছানা নেবেন না। তাতে করে শরীরে বিপাক ক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়। খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নিয়ে শুতে যান। এতে উপকার পাবেন।
  • খেয়ে দেয়ে স্নান করবেন না রাতে। এতে করে আমাদের স্নায়ু শিথিল হয়ে যায় আর আমাদের রক্তপ্রবাহ কমে যায় দেহ জুড়ে। ফলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি ও বাড়ে।

উপসংহার

পরিশেষে আমি বলতে চাই আপনারা যারা সুস্থ স্বাভাবিক স্বাস্থ্য চান তাদের জন্য আমার এই পোস্ট টি অতি জরুরী। এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকল তথ্য পেয়ে উপকৃত হলে অন্য সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *