ঘরোয়া নাইট সিরাম বানানোর সহজ কৌশল
ত্বককে উজ্জ্বল সুন্দর ও বার্ধক্য রোধে ব্রণের হাত থেকে মুক্তি পেতে ডার্ক সার্কেলের হাত থেকে মুক্তি পেতে প্রতিটি মানুষই নাইট সিরাম ব্যবহার করে থাকেন। বাজারে অনেক নাইট সিরাম পাওয়া যায় কিন্তু অনেকে আছেন যারা বেহুলার হওয়ার জন্য এসব কিনতে পারেন না। কিন্তু অনেকে জানেন না এখন ঘরে বসেই নানারকম নাইট সিরাম তৈরি করা যায়। আর প্রত্যেকটি সমস্যার জন্য আলাদা আলাদা নাইস সিরাম ব্যবহার করতে হয়। তাই আজকে আমি আপনাদের জন্য বিভিন্ন রকমের নাইট শ্রীরাম বানানোর পদ্ধতি সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করব।
অনেকে আছেন কিভাবে ত্বককে সুন্দর রাখবেন সে জন্য অনলাইন অনুসন্ধান করে থাকেন ঘরোয়া কোন পদ্ধতির জন্য। আর ঘরোয়া পদ্ধতিতে নাইট সিরাম তৈরি সম্পর্কে জানতে আজকে আমার এ পোস্টটি মন দিয়ে পড়তে হবে। আপনারা যারা নাইট সিরাম তৈরি করা নিয়ে চিন্তিত তারা মন দিয়ে আমার এ পোস্টটি পড়ুন। তাহলে আপনি সুন্দর করে নাইট সিরাম তৈরি করা শিখতে পারবেন। আমি নিচে সুন্দর করে নাই শ্রীরাম তৈরির উপকরণ সমূহ আলোচনা করেছি।
নাইট সিরাম বানানোর উপকরণ
যে সব উপকরণ আমি আলোচনা করলাম সে সব উপকরণ আপনার ত্বকের জন্য একান্ত উপকারী। এসব উপকরণ দিয়ে আপনি তৈরিকৃত নাইট সিরাম তৈরি করে ব্যবহার করলে আপনার বাধ্যক্য আটকানোর সাথে সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা আসবে।
- ক. চাল
- খ. অ্যালোভেরা জেল
- গ. একটি বেস ওয়েলঃ আমন্ড ওয়েল /রোজ ওয়েল
- ঘ. গোলাপ জল
- ঙ. ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- চ. এসেনশিয়াল অয়েলঃ টি ট্রি ওয়েল
বানানোর পদ্ধতি
নাইস সিরাম আপনি কিভাবে বানাবেন সে সম্পর্কে আমি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি নিচে থেকে এর পদ্ধতি সমূহ জেনে নিন।
- ক. নাইট সিরাম বানানোর জন্য প্রথমে দুই চামচ চাল নিন ও সেটাকে ভালো করে ধুয়ে নিন।
- খ. একটি প্যান নিন ও তাতে চার চামচ মতো জল নিন।
- গ. এই প্যানের মধ্যে এইবার দুই চামচ যে চাল আছে সেটা ঢেলে দিন।
- ঘ. এরপর পাঁচ থেকে ছয় মিনিটের জন্য আপনি গ্যাসে বসিয়ে এটি নাড়াচাড়া করে নিন। এই সময় দেখবেন জলটা সাদা হয়ে যাচ্ছে।
- ঙ. এরপর এটিকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য দশ পনেরো মিনিট ছেড়ে দিন।
- চ. ঠান্ডা হওয়ার পর একটি ছাঁকনি দিয়ে জলটা ফিল্টার করে ছেঁকে নিন। দেখবেন এইবার দুই চামচ মত জল আপনি পেয়ে যাবেন।
- ছ. এর মধ্যে এক চামচ অ্যালোভেরা জেল এইবার দিয়ে দিন।
- জ. এরপর এর মধ্যে এক চামচ তেল মিশিয়ে নিন। যদি নরমাল স্কিন হয় তা হলে এক চামচ রোজ ওয়েল দেবেন, যদি আপনার স্ক্রিন ড্রাই হয় তাহলে দেড় চামচ রোজ ওয়েল নেবেন আর যাদের স্কিন অত্যন্ত ড্রাই তারা দুই চামচ দিতে পারেন। যাদের স্কিন অয়েলি বা কম্বাইন্ড তারা আধা চামচ রোজ ওয়েল দেবেন।
কিভাবে রোজ অয়েল বানাবেন জেনে নিন
এবার আমি আলোচনা করব আপনাদের মাঝে কিভাবে আপনি রোজ অয়েল বানাবেন। নিচে রোজ অয়েল বানানোর পদ্ধতি সমূহ দেওয়া হল।
- রোজ ওয়েল বানানোর জন্য নিয়ে নিন একটি গোলাপ। এই গোলাপের থেকে পাঁচ ছয়টি পাঁপড়ি নিয়ে নিন ও এগুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে নিন। এর ফলে যখন এর থেকে তেল বের করবেন তখন গোলাপের রসটা ভালোমতো বেরিয়ে আসবে।
- এরপর একটি পাত্রে অলিভ অয়েল নিয়ে নিন। অলিভ অয়েল না থাকলে আমন্ড ওয়েল নিন। এইবার ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে গ্যাসে রাখুন।
- তবে গ্যাসে ডাইরেক্ট এটি দেবেন না। ডবল বয়লার মেথডে ব্যবহার করুন। ডবল বয়লার মেথডে দেওয়ার জন্য একটি প্যানে জল নিন। তারমধ্যে আচারের কোটোর মতো একটি ছোট কোটোতে ঢাকনা এঁটে গোলাপের পাপড়ি শুদ্ধ তেল ভরে দিন। এবার গ্যাস জ্বালিয়ে চার থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
- চার থেকে পাঁচ মিনিট পর গ্যাস অফ করে ঠাণ্ডা হতে দিন।
- মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে একটি ছাঁকনি দিয়ে তেলটা ছেঁকে নিন। ব্যাস, আপনার রোজ অয়েল রেডি। এটিকে এইবার আপনি ফ্রিজে রেখে দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবে সাত দিনের মধ্যে এটাকে ব্যবহার করে নিতে হবে। তাই অল্প পরিমাণে এটি তৈরি করে নিলেই হবে।
সিরামের মিশ্রণের মধ্যে এবারে গোলাপজল নিন এক চামচ। এসেন্সিয়াল অয়েল এক্ষেত্রে টি ট্রি অয়েল নিনজাদের ব্রণ আছে প্রবন্ধ গাছে তাদের তিন থেকে চার চামচ মিশিয়ে নেবেন এরপর এর মধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল তিনটি দিবেন ভাল করে মিশিয়ে নেবেন আপনার হোম মেড নাইট সিরাম রেডি।
কিভাবে ও কতদিনের জন্য ব্যবহার করবেন এই সিরাম
আপনি কতদিন কিভাবে এই সিরাম ব্যবহার করতে পারবেন তা আমি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা নিচে থেকে এর বিস্তারিত জেনে নিন।
- ১. যদি আপনি শুধুমাত্র ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য এই নাইট সিরাম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে এক সপ্তাহ ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।
- ২. যদি আপনার ত্বক ব্রণ প্রবণ হয়, তাহলে এতে টি ট্রি অয়েলও দিন। যাদের ব্রণ ও ডার্ক সার্কেলের প্রবলেম হয় তারা এক মাস এটি ব্যবহার করুন।
- ৩. রাত্রের বেলায় এটি মুখে রেখে ঘুমিয়ে পড়ুন। সারারাতের জন্য মুখে লাগিয়ে রাখলে ভালো ফল পাবেন।
- ৪. অল্প পরিমাণে এই ক্রিমটি ডট করে গোটা মুখে নিয়ে হাত দিয়ে একটু মেখে নিন।
ঘরোয়া সিরাম কিভাবে সংরক্ষণ করবে নো কতদিনের জন্য
ঘরোয়া ভাবে আপনি যে সিরামটি তৈরি করেছেন সেটি সাতদিনের জন্য ফ্রিজের মধ্যে রাখতে পারবেন। আপনি যদি একমাস এই সিরামটি ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে মাসে চারবার তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এই শ্রীরাম কি আপনি কোন কাঁচের বোতলে রাখবেন প্লাস্টিকের বোতল রাখা যাবে না।
আপনারা যারা আমার এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন তার আশপাশের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন কেননা তারাও জেনে নিই কিভাবে ঘরোয়া ভাবে নাইট সিরাম তৈরি করা যায়। আমি আবারো আপনাদের জন্য কোন টিপস নিয়ে হাজির হব সে পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।