কবিতা

২৬ শে মার্চের ছোট কবিতা। স্বাধীনতা দিবস কবিতা 2024

অনেকেই রয়েছেন যারা অনলাইনে অনুসন্ধান করে যান ২৬ শে মার্চ অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন কবিতা পাওয়ার জন্য। এ কারণে আজকে পোস্টটিতে আমরা এই সকল ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ কিছু কবিতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যারা এরকম কবিতা পড়তে পছন্দ করেন এমন ব্যক্তিগণ বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কবিতা অনুসন্ধান করে থাকেন সত্যিকার অর্থে বর্তমান সময়ে বই থেকে কবিতা পড়ে নেব ব্যক্তিগণ খুব কম লক্ষ্য করা যায় কারণ বই ইচ্ছামত চাহিদা মত কবিতা খুঁজে পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে তারা অনলাইন থেকে বিভিন্ন ধরনের কবিতা বের করে পড়ে থাকেন।

তাই আমরা আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে খুব সুন্দর সুন্দর স্বাধীনতা দিবসের কবিতা উল্লেখ করেছি। আপনারা যারা স্বাধীনতা দিবসে কবিতা পেতে চান তারা আমাদের এই আর্টিকেলটি থেকে পেয়ে যাবেন। যেগুলো ছোট বড় স্বাধীনতা দিবস নিয়ে লেখা আমরা আমাদের কবিতাগুলোর মধ্যে তুলে ধরেছি।

২৬ শে মার্চের কবিতা

২৬শে মার্চের বিশেষ কিছু কবিতা নিয়ে আমরা আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি যেগুলো আপনারা পড়ার পাশাপাশি স্ট্যাটাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন আপনার সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা ফেসবুক আইডিতে। এমন কিছু সুন্দর ছোট কবিতা গুলো নিচে দেওয়া রয়েছে যেগুলো আপনারা করলে খুব ভালোবাসবেন। এ ধরনের কবিতা গুলো পড়তে পারেন এবং ব্যবহার করতে পারবেন আপনারা।

একটি পতাকা পেলে

– হেলাল হাফিজ

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস

ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে

ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,

বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,

সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ

সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা – ৫

রিপোর্ট ১৯৭১

আসাদ চৌধুরী

প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল

বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম

আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।

এ-সব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে

বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়-

বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে

তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে

শুধু মুখ টিপে হাসে।

প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে

কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা-

সূর্য্যকেও পর্দা করে এ-সব রমণী।

অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার

সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা

সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে-

আমি তার সুরকার- তার রক্তে স্বরলিপি লিখি।

মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী

গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়

মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে-ঝিয়ে

খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো,

অস্ফুট গোলাপ-কলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে

কার কী বা আসে যায়।

বিপন্ন বিস্ময়ে কোরানের বাঁকা-বাঁকা পবিত্র হরফ

বোবা হ’য়ে চেয়ে দ্যাখে লম্পটের ক্ষুধা,

মায়ের স্নেহার্ত দেহ ঢেকে রাখে পশুদের পাপ।

পোষা বেড়ালের বাচ্চা চেয়ে-চেয়ে নিবিড় আদর

সারারাত কেঁদেছিলো তাহাদের লাশের ওপর।

এদেশে যে ঈশ্বর আছেন তিনি নাকি

অন্ধ আর বোবা

এই ব’লে তিন কোটি মহিলারা বেচারাকে গালাগালি করে।

জনাব ফ্রয়েড,

এমন কি খোয়াবেও প্রেমিকারা আসে না সহজ পায়ে চপল চরণে।

জনাব ফ্রয়েড, মহিলারা

কামুকের, প্রেমিকের, শৃঙ্গারের সংজ্ঞা ভুলে গ্যাছে।

রকেটের প্রেমে পড়ে ঝ’রে গ্যাছে

ভিক্টোরিয়া পার্কের গীর্জার ঘড়ি,

মুসল্লীর সেজদায় আনত মাথা

নিরপেক্ষ বুলেটের অন্তিম আজানে স্থবির হয়েছে।

বুদ্ধের ক্ষমার মূর্তি ভাঁড়ের মতন

ভ্যাবাচেকা খেয়ে প’ড়ে আছে, তাঁর

মাথার ওপরে

এক ডজন শকুন মৈত্রী মৈত্রী ক’রে

হয়তো বা উঠেছিলো কেঁদে।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা – ৬

শহীদদের প্রতি

 __আসাদ চৌধুরী

তোমাদের যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

শেষ কথাটি সুখের ছিল ?

ঘৃণার ছিল ?

নাকি ক্রোধের,

প্রতিশোধের,

কোনটা ছিল ?

নাকি কোনো সুখের

নাকি মনে তৃপ্তি ছিল

এই যাওয়াটাই সুখের।

তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়

গভীর নদী যেমন বাঁকা

স্রোতটিকে লুকায়

যেমন পাখির ডানার ঝলক

গগনে মিলায়।

সাঁঝে যখন কোকিল ডাকে

কারনিসে কি ধুসর শাখে

বারুদেরই গন্ধস্মৃতি

ভুবন ফেলে ছেয়ে

ফুলের গন্ধ পরাজিত

স্লোগান আসে ধেয়ে।

তোমার যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *