স্বাস্থ্য

ভিটামিন ডি শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়

কথায় আছে ,আহার, নিদ্রা ,ভয় যত করিবে তত হয়। তাই আমাদের উচিত খাদ্যাভাস করা। শরীরের পুষ্টির যোগান হয় নানা ভিটামিন ও মিনারেল থেকে। তাই আমাদের প্রথমে দরকার এই ভিটামিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করা। আর এই ভিটামিনের মধ্যে একটি ভিটামিন হচ্ছে ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি প্রাকৃতিক উপায় ও আমাদের শরীরে উৎপন্ন হয়। শিশুদের জন্য সকালের রোদ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ত্বকে উৎপন্ন করে।

ভিটামিন ডি আমাদের বিভিন্ন প্রকার হিসাবে কাজ করে। এটি শরীরের হাড় ও দাঁতের কাঠামো নির্মাণে ও বিশেষ ভূমিকা রাখে। আর আপনারা যারা এই ভিটামিন ডি সম্পর্কে জানতে চান তারা আমার এই পোস্টটি মনোযোগের সহিত পড়তে থাকবেন। আমি আজকে আমার এ পোস্ট টিতে ভিটামিন-ডি শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।

ভিটামিন ডি কেন জরুরি

ভিটামিন-ডি একটি শিশুর 18 মাস বয়স অবধি বিকাশ সাধন ও বৃদ্ধিতে কাজ করে। এবং এরা হারো বয়স্কদের হাড়জনিত ক্ষয়রোগ আটকাতে উপযোগী। আমি নিচে ভিটামিন ডি সম্পর্কে জরুরী তথ্য গুলো উপস্থাপন করেছি।

  • ভিটামিন ডি তার বহুমুখী উপকারে নিজের অপরিহার্যতা মানুষের জীবনে তুলেছে। এটির জৈবনিক কার্যাবলী ও মেডিক্যাল দিক সত্যি অনস্বীকার্য।
  • ভিটামিন ডি শিশুদের রিকেট রোগ বড়দের অস্টিওমিলেশিয়া এবং বয়স্কদের হাড় জনিত ক্ষয় রোগ আটকাতে দারুন উপযোগী।
  • ভিটামিন ডি এর অন্যতম একটি গুন হলো অন্ত্রেক্যালশিয়াম এর শোষণ ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ১৮ মাস বয়স অব্দি শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধিতে ভিটামিন ডি এর অবদান রয়েছে। এটির অভাবে শিশুর হার নরম থেকে যেতে পারে।
  • ভিটামিন ডি এর অত্যাবশ্যকীয় অভাবে পা এর হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যেতে পারে। গাঁটে যন্ত্রনা এবং বৃদ্ধ মানুষদের বাতের সমস্যা ভোগায়।
  • এছাড়াও থাইরয়েডের কাজে বিঘ্ন, মেরুদণ্ডের ব্যথা ও অসময়ে দাঁত পড়ে যাবার মতো ঘটনাও ঘটে

শরীরে ভিটামিন ডি ঘাটতি হওয়ার লক্ষণ

এবারে আসুন জানিয়ে দিচ্ছি ভিটামিন-ডি আপনাদের শরীরে ঘাটতি হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অনেকেই বুঝতে পারেননা ভিটামিন ডি অভাব হয়েছে কিনা। নিচে থেকে ভিটামিন ডি ঘাটতির লক্ষণ গুলো দেখে নিন।

  • এবার সবার মনেই অভাবিত প্রশ্ন যে শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে বোঝার উপায় টা ঠিক কি?
  • ঘনঘন অসুস্থ হওয়া এবং রোগসারতে দেরি হওয়া একটি প্রধান লক্ষণ।অনেকেই নিজের ডাক্তারি ফর্মুলা দেখান এবং সেটাতে আরো সময় লেগে যায়।
  • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় ভিটামিন ডি এর অভাবে।ঘা শুকতেও অনেকটাই সময় লেগে যায়।
  • কাজের ফলে ক্লান্তি আসা নর্মাল ব্যাপার।কিন্তু অকারণে ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি এবং শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছে কিন্তু হতেই পারে এটির অভাবে।
  • আমরা চুল পড়লে কতনা টোটকা ট্রাই করি সেটা ভালো করার জন্য।কিন্তু ভেতরের সমস্যা খুঁটিয়ে দেখিনা।খাবারে ভিটামিন ডি কম পড়লেও চুল ঝরে যেতে পারে।
  • গা ম্যাজম্যাজ করা, হাত পা যন্ত্রনা, জয়েন্ট পেন বা খেলাধুলা ও চোট ছাড়াও মাংসপেশির ক্র্যাম্প কিন্তু এটার জন্যেই হয়।
  • ওজন বাড়া নিয়ে আমরা কেনা চিন্তিত? সবাই ডায়েট জিম নিয়েই ব্যস্ত থাকি কিন্তু ভিটামিন ডি টনিকেও যে আপনার ওজন ভ্যানিশ হতে পারে ম্যাডাম সেটা কি জানেন?

ভিটামিন ডি এর উপকারিতা

ভিটামিন-ডি শরীরে কি কি উপকার বজায় রাখে সে সম্পর্কে অনেকেই অভিজ্ঞ। আমি আজকে তাদের জন্য ভিটামিন ডি এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। নিচে ভিটামিন ডি এর উপকার সমূহ লিপিবদ্ধ করলাম।

  • ভিটামিন ডি এর নির্দিষ্ট কিছু উপকারিতা দ্রষ্টব্য যা সবার পক্ষে জেনে রাখা দরকার বলেই মনে হয়।
  • চোখের যাবতীয় রোগ আপনার থেকে দূরে থাকবে এটির সেবনে। বয়স বৃদ্ধির সাথে ক্ষীণ দৃষ্টিকে সচল ও স্বাভাবিক রাখতে ও কার্যকরী থাকে এই ভিটামিন।
  • ভিটামিন ডি এর একটি উপাদান হলো ক্যালশিয়াম যা পেশির স্থিতি স্থাপকতা বাড়ায় ও পেশীর টান দূর করে।
  • কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্টজনিত নানান ঝুঁকি হ্রাস করে এবং বিপকক্রিয়া ঠিক রাখে।
  • ক্রনিক মাইগ্রেন, ওজন বৃদ্ধি কমায়। ক্যানসার প্রতিরোধেও এর প্রয়োগে প্রতিক্রিয়া মিলেছে।
  • গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত সূর্যালোক থাকে কিন্তু বর্ষাকালে বা শীত কালে তা থাকেনা।তাই ওই সময় আমাদের মুডসুইং, মনখারাপ দেখা দেয়। সেটা কাটিয়ে দিতে পারে উত্তম পরিমানে ভিটামিন ডি গ্রহণ।
  • রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস ঠেকায়। জৈবনিক প্রতিষেধক রূপে কাজ করে ঠান্ডা লাগা, সর্দিকাশির মতো উপসর্গ দমন করে আর ইম্যুনিটি বুস্ট করে।

শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি

বয়স অনুপাতে ভিটামিন ডি এর ডিমান্ড 25 থেকে 100 এমজি এর মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকি। নিচে শরীরে প্রয়োজনীয় কতটুকু ভিটামিন দরকার তা নিয়ে আলোচনা রইল।

  • শরীরে আদর্শ কি পরিমান ভিটামিন ডি মজুত থাকবে তা বয়স অনুযায়ী ভ্যারি কর।
  • তবে পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি ও ১০০০ মাইক্রো গ্রাম ক্যালসিয়াম এর চাহিদা থেকে থাকে।
  • অন্যদিকে ৭০+ বয়সীদের জন্য সেই পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় ১২০০ মাইক্রোগ্রাম।
  • বয়স অনুপাতে ভিটামিন ডি এর ডিমান্ড ২৫-১০০ এমজি এর মধ্যে ঘোরা ফেরা করে থাকে।

ভিটামিন-ডি কাউন্ট বাড়ানোর উপায়

এবারে দেখে নিন ভিটামিন-ডি শরীরে কিভাবে কাউন্ট বাড়ানো হয়। আপনি নিজে থেকে খাদ্যাভাস থেকে ভিটামিন-ডি শরীরে বাড়াতে পারবেন। নিচের উপায় সমূহ লিপিবদ্ধ রইল।

  • হাড়ের গঠন এর ৮০% ই আসে ভিটামিন ডি এর প্রত্যক্ষ উৎস সূর্যালোক থেকে। তাই সকালে বিকেলে বাচ্চাদের খোলা জায়গায় খেলতে দিন যেখানে রোদ এসেলাগবে।
  • বড়োদেরও দিনে ১০-১৫মিনিট রোদে কাটানো দরকার।তবেই ত্বকে ভিটামিন তৈরি হবে। তবে সানস্ক্রিন মাখবেন না এতে বাধা উৎপাদন হয়।
  • শীতকালে রোদে দাঁড়ানোর সময় বাড়াতে পারেন। ড্রাইভ করার সময় গাড়ির জানলা খোলা রাখুন যাতে রোদ এসে লাগে।
  • গরুর দুধ, কডমাছের লিভার, মাশরুম, মুরগির ডিম ইত্যাদি রাখুন খাদ্য তালিকায়। এগুলো ভিটামিন ডি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • স্যামন মাছ ১০০ গ্রাম রান্না করে খেতে পারেন তাতে যথেষ্ট পাবেন ভিটামিন ডি ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড।
  • পালং, বিনস ইত্যাদির সুপ খেতে পারেন। এগুলো ডি তে ভরপুর। তারপর টকদই, কমলালেবু ইত্যাদি নিতে পারেন এরাও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ।
  • ত্বকের গ্লো বাড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট হিসাবে টনিক বা ট্যাবলেট নিতে পার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *